বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০৩ পূর্বাহ্ন
**মো. কাজল ইব্রাহিম, বিশেষ প্রতিনিধি**
ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসানুল ইসলাম দীপ্তের মৃত্যুর ঘটনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভাঙচুর ও হামলার কোনো সম্পর্ক নেই বলে তার পরিবার ও বন্ধুরা দাবি করেছেন। তাদের অভিযোগ, দীপ্তকে প্রায় ৯ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় জরুরি বিভাগে ফেলে রাখা হয়েছিল, যার ফলেই তার মৃত্যু ঘটে। গাইবান্ধা প্রেসক্লাবে সোমবার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তারা এ ঘটনার সঠিক তদন্ত এবং দায়ীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউবিটি)-এর সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী দীপ্ত, গত ৩০ আগস্ট কুর্মিটোলায় এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হন। তার বন্ধুরা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনার পর দুর্বৃত্তরা দীপ্তের মানিব্যাগ ও মোবাইল ফোন চুরি করে। নিলয় নামে একজন পথচারী তাকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। মাথায় রক্তক্ষরণ বন্ধে জরুরি অস্ত্রোপচার প্রয়োজন হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ঢামেকে আইসিইউ সেবা পেতে ৭ হাজার টাকা দাবি করা হয়েছিল। কিন্তু অর্থের অভাবে এবং স্বজনদের অনুপস্থিতিতে দীপ্তকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি; বরং তাকে জরুরি বিভাগের মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। পরদিন সকালে বিনা চিকিৎসায় তার মৃত্যু ঘটে, যা অত্যন্ত হৃদয়বিদারক ও অমানবিক ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
দীপ্তের বাবা শহীদুল ইসলাম মাজু এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, “আমার ছেলের মৃত্যু কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমরা এর সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার দাবি করছি।” তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান, যেন এই ঘটনার প্রকৃত সত্য উদঘাটন এবং দায়ীদের উপযুক্ত শাস্তি নিশ্চিত করা হয়।
### **বিশেষ আহ্বান:**
– **বাংলাদেশের সকল আইন বিভাগ:** দীপ্তের মৃত্যুর সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সুষ্ঠু বিচারের নিশ্চয়তা প্রদান।
– **বাংলাদেশ পুলিশ প্রধানের দৃষ্টি আকর্ষণ:** দীপ্তের মৃত্যুর পেছনের কারণ অনুসন্ধান এবং এই ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।
– **বাংলাদেশ র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ও আর্মির দৃষ্টি আকর্ষণ:** আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় দ্রুত ও দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করে অপরাধীদের গ্রেফতার এবং বিচার নিশ্চিত করা।
– **বাংলাদেশের আদালত ও বিচার বিভাগের দৃষ্টি আকর্ষণ:** যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দীপ্তের মৃত্যুর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় এনে ন্যায়বিচারের প্রতিষ্ঠা করা।
– **দেশের সকল জনগণের সহযোগিতা:** সরকারের প্রতি সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের দাবি জানিয়ে দীপ্তের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো এবং ন্যায় প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা।
### **মূল পয়েন্টগুলো:**
1. সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়ার পর প্রায় ৯ ঘণ্টা বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখার অভিযোগ।
2. চিকিৎসা সেবা দিতে ৭ হাজার টাকা দাবি করা হলেও তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ।
3. দীপ্তের মৃত্যুর ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে তার বন্ধুদের নামে মামলা করা হয়েছে।
4. দীপ্তের পরিবারের পক্ষ থেকে সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায়বিচারের জন্য সরকারের হস্তক্ষেপের দাবি জানানো হয়েছে।
**অন্তবর্তীকালীন সরকার, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, এবং জাতীয় বিচার বিভাগকে বিশ্বাসযোগ্য ও কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে জনগণের আস্থা অর্জন করার জন্য জোরালো আহ্বান জানানো হচ্ছে। দীপ্তের মৃত্যু যেন তার পরিবার ও জাতির জন্য ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার একটি উদাহরণ হয়ে থাকে।**
**মো. কাজল ইব্রাহিম**